ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতঃ দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের এপিঠ-ওপিঠ

 

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতঃ দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের এপিঠ-ওপিঠ

বর্তমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সূচনা উনিশ শতকের শেষ ও বিশ শতকের শুরু দিকে জায়োনিস্ট আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। যদিও ইহুদি জাতি ও স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব হাজার বছরের। ইউরোপের বৃহৎ শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো অটোমান সাম্রাজ্যের মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ন্ত্রণ ও উপনিবেশ বানানোর চিন্তা থেকে ইউরোপে বসবাসরত ইহুদিদের মধ্যে শুরু করে জায়োনিস্ট সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিভিত্তিক আন্দোলন।

ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থে জেরুজালেমকে স্রষ্টার প্রতিশ্রুত ভূমি হিসেবে গণ্য করা হয়- সেজন্য এই ধরনের পরিকল্পনা সহজতর ছিল। ধর্মগ্রন্থের সেই কল্পনাপ্রসূত ভূমি/রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখা ইহুদিদের আন্দোলনের পেছনে শুরুতে ছিল ইউরোপের ঔপনিবেশিক উদ্দেশ্য। কিন্তু দ্রুতই (১৮৮২) তা রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়। ১৮৯৬ সালে থিওডর হার্জেলের ‘ইহুদি রাষ্ট্র’ বই প্রকাশের পর জায়োনিজম হয়ে ওঠে ইহুদীদের নিজস্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে। একের পর এক ইহুদি সেটেলমেন্ট বাড়তে থাকে ফিলিস্তিনে, ১৮৯৭ সালে গঠিত হয় বিশ্ব জায়োনিস্ট সংঘ। শুরুর দিকে ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী স্রষ্ঠার প্রতিশ্রুত ভূমি হিসেবে যে কল্পনা ইহুদিরা করত, তা রাজনৈতিক রূপ নেয়ার মাধ্যমে ইউরোপের উপনিবেশ বানানোর চিন্তা রূপান্তরিত হয় ইহুদি ঔপনিবেশিক চিন্তায়।

প্রথম আলিয়া (১৮৮২-১৯০৩) চলাকালীন প্রায় ৩৫ হাজার ইহুদি ফিলিস্তিনে আসে, ক্রমান্বয়ে ৫ম আলিয়ার পর ফিলিস্তিনে ইহুদি জনসংখ্যা দাঁড়ায় ৪.৫-৫ লক্ষে। এরই মধ্যে ইহুদিদের সাথে সংঘাত বাধে স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের, দেখা দেয় ইহুদী-মুসলিম দাঙ্গা (১৯২৯)। সেসময় ইহুদিদের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি আবির্ভাব ঘটে ইর্গুন জাই লিউমি নামে জায়োনিস্ট সন্ত্রাসী সংগঠন, যারা নানা হত্যা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রাক্বালে ইহুদিদের আগমন আবারও বাড়ে, যাকে অনেকে ৬ষ্ঠ আলিয়াও বলে থাকেন। 

১৯৪৮ সালে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েল আত্মপ্রকাশ করলে আরব দেশগুলো তার প্রতিবাদ করে, শুরু হয় প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। একে একে চারটি আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কিন্তু আজও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুর সমাধান হয়নি। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের কথা বলা হচ্ছে বহু আগে থেকে। সম্প্রতি আরব রাষ্ট্রগুলো এই দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের উপর জোর দিচ্ছে। দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান কী? এর উভয় দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচিত হবে এই নিবন্ধে।

দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান কী?

দ্বি-রাষ্ট্রীয় বা দুই-রাষ্ট্র সমাধান হলো ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধ সমাধানের লক্ষ্যে দুই জাতিগোষ্ঠীর জন্য দুটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি প্রস্তাবিত কাঠামো, যেখানে ইহুদি জনগণের জন্য ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য থাকবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র। দুটি রাষ্ট্র হবে সার্বভৌম এবং স্বাধীন, এবং তারা নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমানার মধ্যে পাশাপাশি অবস্থান করবে। জাতিসংঘের ১৯৭৪ সালের “Peaceful settlement of the question of Palestine” প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমানা অনুযায়ী ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারিত হবে। পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা নিয়ে গঠিত হবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র, ও বাকি অংশ নিয়ে গঠিত হবে ইসরায়েল। জেরুজালেম হবে দুই রাষ্ট্রের শেয়ার করা রাজধানী। তবে দুই দেশের সীমান্তের প্রয়োজন মিটমাট করার জন্য ছোটখাট জমির অদলবদল করা হবে।

Image source: BBC

১৯৪৮ সালের ১৪ মে কোনো স্বীকৃত সীমানা ছাড়াই ইসরায়েল রাষ্ট্র আত্মপ্রকাশ করে, শেষ হয় ব্রিটিশ ম্যান্ডেট। কিন্তু ফিলিস্তিনের কোনো সীমানা নির্ধারিত হয়নি। আরব রাষ্ট্রসমূহ ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না মেনে আক্রমণ করে, শুরু হয় প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। ইসরায়েল আরো জমি দখল করে নেয়, জর্ডান ও মিশর গাজা ও পশ্চিম তীর তাদের অধীনে নিয়ে যায়। কিন্তু ১৯৬৭ সালে ২য় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই উপদ্বীপ এবং গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল। পরবর্তীতে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির মাধ্যমে মিশরকে সিনাই ফিরিয়ে দেয়া হয়। পরে ইসরায়েল বিভিন্ন চুক্তির ফলে গাজা থেকে সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক সরিয়ে নেয়। ফলে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের ক্ষেত্রে ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমানাকেই প্রস্তাব করা হয়।  

প্রথম কখন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রস্তাব করা হয়?

১৯৩৭ সালে ব্রিটিশরাজ কর্তৃক ফিলিস্তিনে ১৯৩৬-৩৯ সালের আরব বিদ্রোহের কারণ অনুসন্ধানের জন্য নিযুক্ত হয় ‘পিল কমিশন’, যে কমিশন প্রথম দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান প্রস্তাব করে। কমিশন সুপারিশ করেছিল যে ফিলিস্তিনকে দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত করা হবে, একটি ইহুদি রাষ্ট্র এবং একটি আরব রাষ্ট্র, জেরুজালেম এবং এর আশেপাশের এলাকা থাকবে ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীনে। পিল কমিশনের প্রস্তাব আরব নেতৃবৃন্দ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কিন্তু ইহুদি জায়োনিস্ট আন্দোলনকারীরা তা গ্রহণ করেছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং হলোকাস্টের সমাপ্তির পর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৪৭ সালে একটি বিভাজন পরিকল্পনা গ্রহণ করে যা পিল কমিশনের প্রস্তাবের অনুরূপ ছিল। এখানেও একটি ইহুদি রাষ্ট্র এবং একটি আরব ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এই পরিকল্পনাটি আরব নেতৃবৃন্দও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, যা পরবর্তীতে ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের দিকে পরিচালিত করে। আরব নেতৃবৃন্দ প্রত্যাখ্যান করার কারণ ছিল- তখন ইহুদিরা মোট ভূখণ্ডের ১০ শতাংশের মালিক হলেও পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের দেওয়া হয় মোট জমির অর্ধেক। কিন্তু আরবদের জনসংখ্যা এবং জমির মালিকানা ছিল বহিরাগত ইহুদিদের দ্বিগুণ। পিল কমিশনের মতো জাতিসংঘের বিভাজন পরিকল্পনা ছিল ইহুদিদের জন্য গ্রহণযোগ্য, কিন্তু ফিলিস্তিনি আরবদের জন্য উড়ে এসে জুড়ে বসার মতো। আরব নেতারা মেনে না নিলে জায়োনিস্ট নেতারা মিলে পরের বছর ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণা দেন।

দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পরবর্তী পদক্ষেপ

আরব ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েল ও দুই রাষ্ট্র সমাধান মেনে না নিলে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েল তার দখল ও সেটেলমেন্ট অব্যাহত রাখে। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্র ঘোষণার পর ইহুদি আগমন ব্যাপক বাড়ে। ছয় দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েল মিশর ও জর্ডান থেকে গাজা ও পশ্চিম তীর দখলের পাশাপাশি সিনাই উপত্যকা ও গোলান মালভূমি দখল করে নেয়। ইসরায়েল তার মিত্রদের সহায়তায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

ভূরাজনৈতিক কারণে আরব রাষ্ট্রেরও দুর্বলতা ফুটে ওঠে। ১৯৮৭ সালে ইসরায়েলের দখলে থাকা ভূখণের ফিলিস্তিনিরা আন্দোলন শুরু করে, যাকে বলা হয় প্রথম ইন্তিফাদা। শুরুতে ইসরায়েল ব্যাপক দমনপীড়ন চালালেও দীর্ঘকালীন শান্তির জন্য তারা চুক্তির দিকে হাঁটে। সমাধান নিয়ে শুরু হয় আরব নেতাদের সঙ্গে আলোচনা। মাদ্রিদে ১৯৯১ সালে পিএলও-র সাথে আলোচনায় বসে ইসরায়েল। এরপর ১৯৯৩ সালে নরওয়ের শহর অসলোতে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিমন পেরেজ ও পিএলও নেতারা একটি আপোষে পৌঁছান। তার কিছুদিন পর অসলো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

Image Source: Al Jazeera

১৯৯০-এর দশকে অসলো চুক্তির মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান পুনরুজ্জীবিত হয়, যা ছিল ইসরায়েলি সরকার এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-এর মধ্যে কতগুলো ধারাবাহিক চুক্তি। অসলো চুক্তির মূল ধারাগুলো নিম্নরূপ:

পারস্পরিক স্বীকৃতি: ইসরায়েল পিএলও-কে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি এবং পিএলও শান্তিতে ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

অন্তর্বর্তী স্ব-শাসন: পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকার অংশগুলোকে শাসন করার জন্য একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (PA) প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ইসরায়েলি বাহিনীর ক্রমান্বয়ে প্রত্যাহার: পর্যায়ক্রমে ফিলিস্তিন-নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ইসরায়েলকে তার সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়।

চূড়ান্ত মর্যাদা সংক্রান্ত আলোচনা: চুক্তিতে ধারণা করা হয়েছিল যে দুই দেশের সীমান্ত, জেরুজালেমের মর্যাদা এবং ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের মতো ইস্যুতে চূড়ান্ত স্ট্যাটাস নিয়ে আলোচনা তিন বছরের মধ্যে শুরু হবে এবং দুই বছরের মধ্যে শেষ হবে।

কিন্তু পরবর্তী বছর ইহুদি কিছু গোষ্ঠী ফিলিস্তিনি মুসলিমদের উপর আক্রমণ করলে হামাস তাদের প্রতিরোধ করে। হামাস তখনই অসলো চুক্তি ও দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রত্যাখ্যান করে। পরের বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী রবিন চরমপন্থি জায়োনিস্টদের হাতে নিহত হন। ইসরায়েলে অসলো চুক্তির বিপক্ষে প্রচারণা চালিয়ে ক্ষমতায় আসেন নেতানিয়াহু। ফলে ইসরায়েলের পশ্চিম তীর থেকে সৈন্য সরানো সীমিত হয়ে যায়। এভাবে দুই পক্ষের কিছু ঘটনার জের ধরে অন্ধকারে চলে যায় দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান।

এই সমাধানের সমালোচনা

দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের সমালোচকদের মতে, জায়োনিস্টদের শুরু থেকেই পরিকল্পনা তারা পুরো ফিলিস্তিন দখল করে ইহুদি রাষ্ট্র তৈরি করবে, সেখানে ইসরায়েলের দখল বন্ধের গ্যারান্টি কতটুকু? ১৮৮২ সালে বিন ইয়াহুদা, আধুনিক হিব্রুর জনক, তার বন্ধুর কাছে চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি পুরো ফিলিস্তিন দখল করার জন্য ইহুদিদের সেখানে মেজরিটি হওয়ার উপর জোর দেন।

বেলফোর ঘোষণার সময়ও জুইশ ন্যাশনাল হোমের কথা বলা হয় যেখানে পুরো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কথা বলা হয়। State এর সাথে s যুক্ত করা হয় ১৯৪০ এর দশকের মাঝামাঝি। এর পূর্ব পর্যন্ত শুরু একটি (ইহুদি) রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয় ১৯২০-৩০ দশক পর্যন্ত। অর্থাৎ বিভিন্ন ডকুমেন্ট অনুযায়ী জায়োনিস্টদের বৃহৎ ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং দখল ও সেটেলমেন্ট দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের যথাযথ বাস্তবায়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

জেরুজালেমের স্ট্যাটাস কী হবে এই নিয়েও দ্বন্দ্ব বিদ্যমান। ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন উভয় পক্ষই শহরটিকে তাদের রাজধানী হিসেবে দাবি করে। ফিলিস্তিনিরা চায় পূর্ব জেরুজালেম তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হোক, অন্যদিকে ইসরায়েল চায় পুরো শহরের ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে। দুই পক্ষ একটি আপস সমাধানে একমত হতে পারেনি। জেরুজালেমে অবস্থিত তিন ধর্মের পুণ্যস্থান। সেখানে মুসলিমরা প্রতিনিয়ত ইসরায়েলি সেনাদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে। জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শঙ্কার উদ্ভব হয়েছে যা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান এর আরেকটি বাধা।

তাছাড়া ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত হবে তা-ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ফিলিস্তিনিরা সকল শরণার্থী এবং তাদের বংশধরদের জন্য বর্তমানের ইসরায়েলে ফিরে যাওয়ার অধিকার দাবি করে, অন্যদিকে ইসরায়েল আশঙ্কা করে এর ফলে ইসরায়েল জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের দিকে যাবে যা একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে তার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে। উভয় পক্ষ প্রত্যাবর্তনের অধিকার বা শরণার্থীদের জন্য ক্ষতিপূরণ নিয়ে কোনো আপস সমাধানে একমত হতে পারেনি। উপরন্তু, সীমান্ত নিয়ে কি ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমান্ত হবে, মিশর, জর্ডান ও সিরিয়ার সাথে সীমান্ত নিয়েও বিরোধ এই সমাধানের বেলায় বিতর্ক তৈরি করে।

উপরোক্ত কারণে ইলান পাপ্পে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানই একমাত্র মুক্তির পথ- এই ধারণাকে মিথ (রূপকথা) বলেছেন। অনেকে একে Two States Illusion বলে সমালোচনা করেন। ২০০৯ সাল থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে কোনো সফল আলোচনা হয়নি, এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা বর্তমানে অনিশ্চিত।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.