সফলতার সূত্র

 

সফলতার সূত্র


আপনি কি জানেন যে, সফলতা আপনার মৌলিক অধিকার! কী! খুব অবাক হচ্ছেন তো আমার কথায়? একদম অবাক হবেন না। বরং, ধৈর্য ধরে পড়তে থাকুন আমার কথাগুলো। সাফল্যের পথে রয়েছে অনেক বিপত্তি, অনেক মরীচিকা। এমনকি সফলতাকে খুঁজতে গিয়ে আপনি হারিয়ে যেতে পারেন চোরাবালিতে!

সফল ও ব্যর্থ মানুষের মধ্যে আসল পার্থক্যটা হলো তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে। আমরা আপনাদের দেখিয়ে দেবো সফলতার স্বর্ণদুয়ার উন্মোচনের কিছু সূত্র। দেখবেন, সফলতা আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে।

১। সফলতার লক্ষ্যে অবিচল থাকুন:

জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। সেই লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হোন অবিচল সাহসের সাথে। দৃঢ় থাকুন নিজের বিশ্বাসে। নিজের নির্ধারিত লক্ষ্যকে কখনোই ছোট করে দেখবেন না। বিশ্বাস রাখুন নিজের ওপর। সাহস রাখুন প্রতিকূলতাকে জয় করার। সমস্যা আপনার সামনে আসতেই পারে। কিন্তু, মনে রাখবেন- সমাধানহীন সমস্যা কোনো সমস্যাই না। প্রত্যেক সমস্যারই সমাধান থাকে। অতএব কখনোই সমস্যা কিংবা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলে বিচলিত হবেন না। বরং, আত্মবিশ্বাসের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুন। মনে রাখবেন, জীবন আপনার। জীবনের লক্ষ্যে আপনাকে পৌঁছাতে হবেই।

২। ধৈর্য হারাবেন না:

অল্পতেই ধৈর্যহারা হবেন না। সৃষ্টিকর্তা ধৈর্যশীলদের সাথে থাকেন। সবর করতে শেখা খুব জরুরি। ‘জীবনে কিছুই পেলাম না’, ‘জীবনে কিছুই হলো না’- কখনোই এগুলো ভাববেন না। বরং, নিজের মস্তিষ্কে ইতিবাচক বার্তা পাঠান। আপনি পারবেন, আপনাকে পারতে হবে। স্রষ্টার ওপর বিশ্বাস রাখুন। বিশ্বাস করুন- আপনার পথের একটি দরজা বন্ধ হলে, সহস্রটি দরজা খুলে যাবে আপনার জন্যে। ঠাণ্ডা মাথায় নীরব সংগ্রাম করে যানJan 17 2017 18 33 32

৩। সফলতার জন্য শুকরিয়া আদায় করুন:

যা পাচ্ছেন, যতটুকু পাচ্ছেন- তাই নিয়ে মহান স্রষ্টার কাছে শুকরিয়া আদায় করুন। শুকরিয়া আদায়ে বরকত বাড়ে। আপনি স্রষ্টার প্রতি যত বেশি শুকরিয়া আদায় করবেন, তিনি আপনার প্রতি তত বেশি রহমত নাযিল করবেন। সফলতার পথে স্রষ্টার রহমত খুব বড় নেয়ামত। সন্তুষ্ট হওয়া শিখুন। অপ্রাপ্তি নিয়ে হাহাকার করলে কোনোদিনো শান্তি পাবেন না। হাহাকার করা ব্যর্থ মানুষদের কাজ। সফল মানুষেরা সন্তুষ্টির সাথে সাহস নিয়ে এগিয়ে যায়।

সংশয়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এগিয়ে যান অবিচল লক্ষ্যের দিকে।

৪। সাদকা দিন:

প্রত্যেক ধর্মেই সাদকা দেওয়াকে খুব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়েছে। অর্থ, শ্রম, মেধা ও সময়কে সেবায় রূপান্তরিত করে নিজের ও অন্যের কল্যাণে কাজ করা এবং বঞ্চিত-অসহায়কে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করাই হলো সাদকা। অন্যের উপকারে নিজেকে নিয়োজিত করলে, নিজের কাজে বরকত পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত দান বা সাদকা দিতে পারেন।

৫। সফলতার ক্ষেত্রে সংশয় ত্যাগ করুন:

সংশয় মনকে পঙ্গু করে দেয়। মনের পঙ্গুত্ব খুব ভয়ংকর। নেতিবাচক চিন্তা আপনার মনকে প্রভাবিত করে। ‘পারবো কি না’, ‘হবে কি না’, ‘যদি না হয়’, ‘না হলে কী হবে’ –এ ধরনের সংশয়বাদী চিন্তাগুলোই আপনাকে পিছিয়ে দেয়। এসব নেতিবাচক চিন্তা বা সংশয়বাদকে মনের গহীনে একদম প্রশ্রয় দেবেন না। সংশয়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এগিয়ে যান অবিচল লক্ষ্যের দিকে।

৬। সমাজকে ভয় পাবেন না:

নিজের লক্ষ্যে এগোনোর ক্ষেত্রে সমাজকে একদম ভয় পাবেন না। সমাজের কাজই হলো আপনাকে বিভ্রান্ত করা। সমাজকে ভয় পেয়ে আপনি হেরে গেলে, জিতে যাবে সমাজ। সমাজের পিছুটানকে কিছুতেই জিততে দেবেন না। নিজেকে বলুন- ‘তোমরা যে যা বলো ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই’!

Career Guidance Course Thumbnail High Quality

৭। অলীক কল্পনাকে দূরে রাখতে হবে:

‘যদি আমার এটা থাকতো’, ‘এমন যদি হতো’- এ ধরনের কল্পনা গুলোই হতাশাগ্রস্ত জীবনের জন্যে দায়ী। এই ধরনের চিন্তা থেকে দূরে থাকতে হবে। জীবনে চলার পথে ‘যদি’ কে ‘নদী’তে ফেলতে হবে। ‘কী হলে কী হতো’ –সেই চিন্তা বাদ দেওয়া শিখতে হবে। অতীত নিয়ে চিন্তাগ্রস্ত থেকে বর্তমানকে অবহেলা করা যাবে না। অলীক কল্পনাকে দূরে সরিয়ে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দেখবেন, সাফল্য আপনারই হবে!

৮। অলসতা পরিহার করতে হবে:

আলস্য সফলতার পথে বিরাট বাধা। আকাশ কুসুম কল্পনা নিয়ে বসে থাকা যাবে না। প্রতিটা মুহূর্তকে কাজে লাগাতে হবে। তবে, প্রয়োজনীয় বিশ্রামেও ত্রুটি রাখা যাবে না। কারণ, প্রয়োজনীয় বিশ্রাম আপনাকে কাজ করবার শক্তি যোগাবে। শারীরিক দুর্বলতা, মানসিক অস্থিরতাসহ আপনাকে চারদিকে হাজারো সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু, অজুহাত দেওয়া চলবে না। অজুহাত দেওয়াই আলসেমির লক্ষণ। সমস্যাকে সমাধানে রূপ দিতে হবে।

No More

৯। দুঃখ বিলাসিতা হতে দূরে থাকতে হবে:

এই প্রজন্মের ভয়ানক সমস্যা হলো দুঃখ বিলাসিতা। ‘আমার কিছুই নেই’, ‘আমার কেউ নাই’, ‘আমার খুব একা লাগছে’- এ ধরনের নেতি চিন্তা দূর করতে হবে। নিজেকে বোঝা ভাববেন না। বোঝা ভাববেন না দুনিয়াকে। নিজেকে সুখী মনে করুন। কাজে আনন্দ পাবেন। আর, কাজের আনন্দই আপনাকে সফলতা এনে দেবে।!

১০। মনোযোগের কেন্দ্র নির্ধারণ করুন:

বিভিন্ন দিকে মনোযোগ না দিয়ে মনোযোগের কেন্দ্র নির্বাচন করুন। সেই অনুযায়ী ফোকাস করুন। বিক্ষিপ্ত চিন্তা আপনার মনোযোগকে বিঘ্নিত করতে পারে। তাই ফোকাস করে এগিয়ে চলুন। সফলতা আপনার দিকে এগোবে।
প্রতিদিন চেষ্টা করে যান ব্যর্থতার নাগপাশ থেকে বেরিয়ে সফলতার প্রাসাদ বানাতে। একদিন না একদিন ঠিক জয়ী হবেন। নিজের সাম্রাজ্যে নিজে রাজার মতো থাকুন। সফলতার সাথে বাঁচুন। সফল মানুষ হয়ে বাঁচুন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.