শরীরে ঠান্ডা বা গরম লাগে কেন

 

শরীরে ঠান্ডা বা গরম লাগে কেন


শরীরে ঠান্ডা বা গরম লাগার পেছনে দায়ী শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা
শরীরে ঠান্ডা বা গরম লাগার পেছনে দায়ী শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রাছবি : প্রতীকী ছবি

মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। সারা দিন সাধারণত আমাদের দেহের তাপমাত্রা ৯৭ থেকে ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত ওঠানামা করতে পারে। জ্বর হলে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা ওঠাও অস্বাভাবিক নয়।

দেহের স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিক রাখতে শরীরের ভেতরে সর্বক্ষণ তাপ তৈরি হচ্ছে। সেই হিসেবে বলা যায়, মানবদেহ আসলে তাপ তৈরির মেশিন। পরীক্ষায় দেখা গেছে, একজন মানুষের দেহে যে পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হয়, তা একটি ১০০ ওয়াটের বৈদ্যুতিক বাল্বের উৎপাদিত তাপের সমান। আমাদের দেহের বিভিন্ন ধরনের কাজের ওপর এই তাপের পরিমাণ নির্ভর করে। কোনো কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকলে বা ঘুমালে শরীরে উৎপন্ন তাপের পরিমাণ হয় ৫০ ওয়াট বাল্বের সমান। আর হালকা কাজকর্ম করলে প্রায় ২০০ ওয়াট বাল্বের সমান তাপ উৎপন্ন হয়। আবার ভারী কাজ করলে (যেমন সিঁড়ি ভাঙলে) উৎপন্ন হতে পারে প্রায় ১ হাজার ওয়াট বাল্বের সমান তাপ।


এই তাপের কারণে আমাদের দেহের তাপমাত্রা ওঠানামা করে। সাধারণত চারপাশের পরিবেশের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৭৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) থাকলে, তা আমাদের দেহের জন্য আরামদায়ক। কিন্তু তাপমাত্রা এর চেয়ে বাড়লে বা কমলে শরীরে গরম বা ঠান্ডার অনুভূতি জাগে। দেহের তাপমাত্রা চারপাশের পরিবেশের চেয়ে বেশি হলে ঠান্ডা লাগে। আবার পরিবেশের চেয়ে শরীরের তাপ কম হলে গরম লাগে। এ কারণেই জ্বর হলে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, আমরা ঠান্ডা অনুভব করি। আবার জ্বর কমে গেলে গা গরমে ঘেমে ওঠে।


আবার শারীরিক কোনো কাজ করলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু তারপরও গরম লাগে। কারণ কাজের ফলে শরীরের কোষের কাজ বেড়ে যায়। ফলে দেহে তৈরি হয় অতিরিক্ত তাপ। এই বাড়তি তাপ শরীর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য আমরা ঘেমে উঠি। এটা আসলে আমাদের দেহকে ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক একটি প্রক্রিয়া।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.