ক্যারিয়ারের শুরু ইন্টার্নশিপ দিয়ে! জেনে নাও ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা

 

ক্যারিয়ারের শুরু ইন্টার্নশিপ দিয়ে! জেনে নাও ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা

“You need experience to get experience.”

চাকরি জগতে সবচেয়ে বেশিবার শোনা বাক্য হলো এটি। কারণ চাকরির সময় সবাই চাকরিপ্রার্থীদের কাছে জানতে চান তাদের পূর্বে কোনো কাজের অভিজ্ঞতা আছে নাকি। আমাদের মাথায় তখন প্রশ্ন আসে, অভিজ্ঞতার জন্যই তো চাকরি করতে চাচ্ছি! তাহলে আবার এই প্রশ্ন কেন? আর চাকরি না করলে অভিজ্ঞতা আসবেই বা কীভাবে? এই প্রশ্নের সবচেয়ে সহজ উত্তর হলো ইন্টার্নশিপ!

তাই আজকের ব্লগে আমরা প্রথমেই জানবো ইন্টার্নশিপ কি এবং কিভাবে ইন্টার্নশিপ দিয়ে ক্যারিয়ারের শুরু করবো? এরপর আলোচনা এগিয়ে যাবে ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য,  ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা, উপকারিতা ও  অপকারিতা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে।

ইন্টার্নশিপ কি?

ইন্টার্নশিপ কথাটা আমরা সবাই কমবেশি শুনে থাকলেও, ইন্টার্নশিপ কি এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষেরই নেই। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে বা বিনা পারিশ্রমিক কাজ শেখা, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কাজ করাকেই ইন্টার্নশিপ বলে। আর যারা ইন্টার্নশিপ করে তাদেরকে বলা হয় ইন্টার্ন বা শিক্ষানবিশ।

সাধারণত যে যেই বিষয়ে পড়াশুনা করে বা দক্ষ, তারা সেই বিষয় রিলেটেড কাজের উপর ইন্টার্নশিপ করে। যেমন: মার্কেটিং, ফিন্যান্স, কম্পিউটার সায়েন্স ইত্যাদি। ইন্টার্নশিপ করার উপযুক্ত সময় হলো শিক্ষাজীবন। কারণ, এই সময় পড়ার পাশাপাশি বাকি সময়টুকু ইন্টার্নির দিকে দেওয়া যায়। আর ইন্টার্নশিপ যেহেতু নিজের পড়ার বিষয়ের উপরেই হয়, সেহেতু দু’টোর সামঞ্জস্য রেখে করা যায়।

ইন্টার্নশিপ এর প্রকারভেদ? 

ইন্টার্নশিপ মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে, Paid Internship ও Unpaid Internship। এই দুইটির বাইরেও আরেক ধরণের ইন্টার্নশিপ আছে, যেখানে নিজেরই অর্থ দিয়ে কারিগরি বিদ্যা অর্জন করতে হয়। এর বদলে তোমাকে দেওয়া হবে একটি সার্টিফিকেট, যা পরে তুমি সেই সেক্টরে কাজে লাগাতে পারবে। প্রতিটি ইন্টার্নশিপের মেয়াদ সাধারণত ১ মাস থেকে ১ বছর হয়ে থাকে। আবার কাজের সময়ের ওপর ভিত্তি করে, ইন্টার্নশিপকে Part Time Internship ও Full Time Internship; এই ভাগে ভাগ করা যায়। 

ক্যারিয়ারের শুরু ইন্টার্নশিপ দিয়ে 

শিক্ষার্থী জীবনে অনেক কিছুই একসাথে সামলে চলতে হয়। পড়ালেখা, বন্ধু, পরিবার আর সেই সাথে নিজের কাজ। কিন্তু এতো কিছুর মাঝেও নিজেকে সামনের জীবনের জন্য প্রস্তুত করে তুলতে হয়। ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে বীজ বোনার কাজটা করতে হয় শিক্ষার্থী জীবনেই, আরও নির্দিষ্ট করে বললে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। কারণ এখানে একজন শিক্ষার্থী যেই ৪ থেকে ৫ বছর সময় পাড় করে, তার পুরোটা জুড়েই রাস্তা খোলা থাকে বিশ্বজগতের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার। এই সময়ের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীর সামনে অনেক সুযোগ আসে নিজেকে অন্য সবার থেকে উন্নত করার।

নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এই সময়টা একদম মোক্ষম। ক্লাবিং করে কিংবা কোনো ধরণের সংস্থার সাথে যুক্ত থেকে বিভিন্ন ধরণের কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব। তবে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো কোনো ইন্টার্নশিপের সাথে যুক্ত হওয়া।

ছাত্রজীবনে ইন্টার্নশিপ
ছাত্রজীবনে ইন্টার্নশিপ (Image source: Freepik)

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় এমন প্রায় সব বিষয়েই ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। এই ইন্টার্নশিপ হলো নির্দিষ্ট বিভাগ ভিত্তিক কাজে হাতে কলমে শেখা। এখানে শিক্ষার্থীরা তাদের একাডেমিক বিষয় নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা লাভ করে। তবে বর্তমানের প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় টিকে থাকার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে একাডেমিক অভিজ্ঞতার পাশাপাশি আরও অনেক ক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। তবে এটা নির্ভর করে একজন শিক্ষার্থী তার ক্যারিয়ার কোন দিকে পরিচালনা করতে চায় তার উপর। কেউ হয়তো চায় ব্যাংকিং ক্যারিয়ার তৈরি করতে, কেউবা চায় নিজের বিজনেস শুরু করতে, কেউ চায় শিক্ষকতা করতে কিংবা কেউ চায় অফিস ম্যানেজমেন্টের কাজ করতে। যে ধরণের কাজই হোক না কেনো, সবক্ষেত্রেই ইন্টার্নশিপ এক বিশেষ ভূমিকা রাখে।     

ইন্টার্নশিপ দিবে তোমাকে পুরো বিশ্বকে জানার এক দারুণ সুযোগ।
ইন্টার্নশিপ দিবে তোমাকে পুরো বিশ্বকে জানার এক দারুণ সুযোগ। (Image source: DepositPhotos)

তুমি যখন কোনো কাজের অথবা চাকরির জন্য আবেদন করবে অর্থাৎ নিজের ক্যারিয়ার শুরু করতে যাবে, তখন দেখা হবে এধরনের কাজে তোমার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে কিনা। সবে মাত্র শিক্ষা জীবন শেষ করে একজন তো হঠাৎ করেই সব কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করে ফেলতে পারবে না। এখানেই ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতাটি কাজে লাগে। এখানে কাজ করার অভিজ্ঞতাই তোমাকে অন্য সবার থেকে এগিয়ে রাখবে।


একাডেমিক রেজাল্টই যে সবসময় কাজে ভালো হবার ইঙ্গিত দেয় তা কিন্তু না। একজনের একাডেমিক রেজাল্ট অনেক ভালো, কিন্তু তার বাস্তবিক জীবনে কাজ করার তেমন কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। আর তোমার ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে কাজ করার বেশ ভালো একটি অভিজ্ঞতা রয়েছে। তোমার রেজাল্ট যদি তুলনামূলক খারাপ হয়েও থাকে, অভিজ্ঞতার বিচারে তোমাকেই অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য 

আমাদের চারপাশে প্রতিদিন প্রতিযোগিতামূলক একটি সমাজ তৈরি হচ্ছে। পড়ালেখার কথা বলো, চাকরির সুযোগের কথা বলো কিংবা ব্যাবসা বাণিজ্যের কথা বলো। সব জায়গাতেই রয়েছে এক অসম প্রতিযোগিতা। আর এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে নিজের সেরাটা দেয়া খুবই জরুরি। আর নিজের সেরাটা তখনই দেয়া সম্ভব যখন কোনো বিশেষক্ষেত্রে তোমার দক্ষতা কিংবা পারদর্শিতা থাকবে। আর যদি সেই বিশেষক্ষেত্রে কাজ করার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে দক্ষতা কিংবা পারদর্শিতা যাই বলো না কেনো, তা অর্জন করা সম্ভব নয়। আর ইন্টার্নশিপ করে এই অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য শিক্ষার্থী জীবনটাই হলো সেরা সময়। আর এই শিক্ষার্থী জীবনে ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য হলো –

ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য ১: নতুন অভিজ্ঞতা

প্রথমত, ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য হলো নতুন কিছু অভিজ্ঞতা বা নতুন কিছু শেখা। কলেজ জীবনে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়া অবস্থায় ইন্টার্নশিপ শিক্ষার্থীদের একটি নতুন অভিজ্ঞতা দেয়। 

ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য ২: সিভিকে সমৃদ্ধ করা 

ইন্টার্নশিপে নতুন অভিজ্ঞতার পাশাপাশি নিজের সিভিকে আরো সমৃদ্ধ করার অনেক ভালো একটি সুযোগ। তোমার সিভির “Experience” -এর জায়গায় ইন্টার্নশিপের কথা উল্লেখ করতে পারবেন।

ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য ৩: কমিউনিকেশন স্কিল 

কমিউনিকেশন স্কিল বা যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানোর ভালো একটি সুযোগ ইন্টার্নশিপ। ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে তোমার কমিউনিকেশন স্কিল বৃদ্ধির পাশাপাশি তুমি সুযোগ পাবে নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া।

ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য ৪: পড়াশোনার বাস্তব প্রয়োগ 

এতো তুমি পাঠ্য-পুস্তকে যা পড়ে এসেছেন বা পড়াশোনায় যা শিখছেন তার বাস্তব প্রয়োগ করতে শিখবে ইন্টার্নশিপে।

ইন্টার্নশিপ এর উদ্দেশ্য ৫: অফিস শিষ্টাচার 

ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনীয় শিষ্টাচার শিখতে পারে। শুধু তাই না পেশাদারিত্বের দক্ষতার হাতেখড়ি ইন্টার্নশিপ  দিয়েই শুরু হয়।

ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা 

ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপে কাজ করলে আরও কী কী সুবিধা পাওয়া যায় তা এক নজরে দেখে নেয়া যাক।

ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা ১: কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ানো 

কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য এটি হলো সবচেয়ে মোক্ষম উপায়। তুমি কোনদিকে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাও তার উপর ভিত্তি করে একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে যাও। সেখানে কাজ করতে পারলে কর্মজগতের বাস্তব চিত্রের ব্যাপারে একটি ধারণা পাবে। বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সামান্য অর্থের বিনিময়ে অথবা অনেকক্ষেত্রে প্রায় বিনামূল্যেই শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে। ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্রে অর্থের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করা। কারণ এসকল অভিজ্ঞতার গুণেই তুমি পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরাসরি কাজ করার সুযোগ পেতে পারো।

অভিজ্ঞতার পাশাপাশি থাকা চাই দক্ষতাও
অভিজ্ঞতার পাশাপাশি থাকা চাই দক্ষতাও (GIF source: Giphy)

অর্থাৎ পড়ালেখার পাশাপাশি তোমার অনেক সুযোগ আছে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জনের। তবে এটা খেয়াল রেখো যে, কাজ করার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি কাজ করার দক্ষতাও থাকা চাই। অনেকেই ছাত্রজীবনে একাধিক ক্লাব কিংবা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকে। কিন্তু দিনশেষে কোনো জায়গাতেই তার পক্ষে সময় দেয়া সম্ভব হয় না। এমনটা করলে কাজের দক্ষতা কিংবা অভিজ্ঞতা কোনটিই তৈরি হবে না। অর্থাৎ অন্য সবকিছুর মতো তোমার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা দুটোরই একটি ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হবে। একথা মনে রাখতে হবে যে, কাজের দক্ষতা দিয়ে তুমি চাইলে তোমার চেয়ে বয়সে বড় এমন কাউকে টপকে যাওয়া অসম্ভব কিছু না।

ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা ২: নেটওয়ার্ক তৈরিতে সাহায্য করে

কোনো জায়গায় ইন্টার্নশিপে যুক্ত হলে সেখানে তোমার সহকর্মীদের সাথে এবং ইন্টার্নশিপের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের সাথে বেশ ভালো একটি সম্পর্ক তৈরি হয়। ভালো সম্পর্কটি যে এমনিতেই তৈরি হয়ে যায় তা না, সম্পর্কটি তৈরি করে নিতে হয়। এটি নিজের ভালোর জন্যই করা উচিৎ। কারণ ইন্টার্নশিপের সময় তাদের সাথে যেই সম্পর্কটি তৈরি হয়েছে, তা পরবর্তীতে যেকোনো কাজে লাগতে পারে। ইন্টার্নশিপ শেষ হয়ে যাওয়া মানে কিন্তু সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়া বোঝায় না। পরবর্তীতে সিভি তৈরির সময় কিংবা অন্য কোনো কাজে রেফারেন্সের সাহায্য লাগলে এখান থেকে অবশ্যই সাহায্য পাবে।

HHEBVed V
নেটওয়ার্ক তৈরিতে ইন্টার্নশিপের ভূমিকা কোনোভাবেই ফেলে দেয়া যাবে না। (Imaage source: Digital Ocean Blog)

ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা ৩: কর্মজগৎ কীরকম তা বুঝতে সহজ হয়

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তরুণরা কোনো রকম পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই কর্মজগতে ঢুকে পড়ে। এই নতুন পরিবেশটি কীরকম বা এখানে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়, সে ব্যাপারে অনেকেরই কোনো ধারণা থাকে না। তাই শুরুতে নিজেকে ঠিকমতো মানিয়ে নিতে প্রায় সবারই কষ্ট হয়। ইন্টার্নশিপের ব্যাপারাটা এখানে একটি সমাধান হয়ে দাঁড়ায়। তুমি যেই কর্মক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাও, তার ব্যাপারে আগে থেকে ধারণা থাকলে তুমি সহজেই বুঝতে পারবে সেখানকার পরিবেশ কীরকম বা কীভাবে সেখানে মানিয়ে চলতে হয়। আবার যেখানে কাজ করতে যাচ্ছো, সেখানে তোমার থেকে কী আশা করা হচ্ছে তা বুঝতেও সুবিধা হয় অনেক।

ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা ৪: ইন্টার্নশিপ থেকেই রিক্রুট হবার সুযোগ থাকে

ইন্টার্নশিপে যদি আশানুরূপ ফল দেখাতে পারো, তাহলে অনেক সময় তোমাকে পার্ট টাইম কিংবা ফুল টাইম কাজের জন্য রিক্রুট করা হতে পারে। এটা নির্ভর করে তুমি কাজের প্রতি কতটুকু আগ্রহ দেখাচ্ছো তার উপর। ইন্টার্নশিপ শেষে যদি রিক্রুট হবার সুযোগ নাও থাকে অথবা পড়ালেখার জন্য যদি কাজে যোগ দিতে নাও পারো, তখন পরবর্তীতে সরাসরি কাজে জন্য আবেদন করলে তোমাকে অগ্রাধিকার দেয়া হতে পারে। কারণ তারা তো জানে যে তুমি তাদের সাথে আগে কাজ করেছো। তাদের কাজের ধরণ তুমি বোঝো। একারণে ইন্টার্নশিপের সুযোগ থাকলে তা কখনোই হাতছাড়া করতে হয় না।

অনেক সময় ইন্টার্নশিপ শেষেই কাজ যোগ দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়।
অনেক সময় ইন্টার্নশিপ শেষেই কাজ যোগ দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। (Image source: Capital Research Center)

ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা ৫: সত্যিকার পরিবেশে কাজ করার একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়

ইন্টার্নশিপে সত্যিকার পরিবেশে কাজ করার একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়। এই অভিজ্ঞতাটি অত্যন্ত দরকারি। আগেও বলেছি যে, বেশিরভাগ তরুণ নতুন পরিবেশে কাজ করতে এসে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে না। আসলে পড়ালেখার পরিবেশ ছেড়ে কাজ করার জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পরিবেশে মানিয়ে নেয়ার জন্য সবসময়ই কারো না কারো সাহায্য প্রয়োজন। তবে এধরনের পরিবেশে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে মানিয়ে নেয়ার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। পাশাপাশি ইন্টার্নশিপ শেষে যখন ফুল টাইমার হিসেবে কাজে যোগ দিবে, তখন সহজেই বুঝতে পারবে তোমার কোন সময় কী করা উচিৎ আর কী করা উচিৎ না।

ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা ৬: নিজের দক্ষতাকে ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগ হয়

যদিও ইন্টার্নশিপে যোগ দিচ্ছ কাজ করার দক্ষতা অর্জনের জন্য, কিন্তু এখানে তুমি বুঝতে পারো যে ক্যারিয়ার হিসেবে তুমি যেই জগৎটাকে বেঁছে নিতে চাচ্ছো তা তোমার জন্য ভালো হবে কিনা। ক্যারিয়ারের লক্ষ্য পূরণের জন্য তোমার কোথায় কোথায় নিজেকে সংশোধন করা উচিৎ তা বোঝার সুযোগ পাবে এখান থেকে। পরবর্তীতে এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎ জীবনে নিজেকে এগিয়ে নেয়ার কাজটা অনেক সহজ করে ফেলতে পারবে


ইন্টার্নশিপ কেনো করবে?

একাডেমিক গ্রেড ক্যারিয়ার গড়তে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ইন্টার্নশিপ। তবে সেখানে গ্রেডটি যদি কেবল পড়ালেখা নির্ভরই হয়ে থাকে, তবে তা বাস্তবিক জীবনে তেমন কোনো সাহায্য করতে পারবে না। দলগত কাজ, সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার অভিজ্ঞতা, নতুন সহকর্মীদের সাথে মিলে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এসকল দক্ষতা থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাহলেই একাডেমিক শিক্ষাটি ফলপ্রসূ হয়ে উঠে। শুধু মাত্র দক্ষতা জানলেই হবে না। দক্ষতাকে কীভাবে কাজে লাগাতে হয়, সে ব্যাপারেও ধারণা থাকা আবশ্যক।

ইন্টার্নশিপ কেনো করবে?
ইন্টার্নশিপ কেনো করবে? (Image source: CIO.com)

ইন্টার্নশিপ কীভাবে যোগাড় করবো? 

কোনো জিনিসই তুমি রেডিমেড পেয়ে যাবে না। কোনোকিছু পেতে হলে তো একটু কষ্ট করতেই হবে। নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা এবং বিভিন্ন কোম্পানির ওয়েবসাইটে চোখ রাখো। সেখানে প্রায়ই চাকরির ও ইন্টার্নশিপের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়৷

এই যে আমি ১০ মিনিট স্কুলে একজন ইন্টার্ন ব্লগার হিসেবে কাজ করছি। শুধু আমিই না, আমার সাথে আরো ৪ জন ভাইয়া-আপুও ইন্টার্ন ব্লগার হিসেবে এখানে আছেন। আমরাও কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমেই খোঁজ পেয়েছিলাম যে ১০ মিনিট স্কুলে ব্লগ ইন্টার্ন নেওয়া হবে। তোমাদের মধ্যে অনেকেই বলতে পারো, আমি তো ঢাকায় থাকি না, আমাকে নিশ্চয়ই কেউ কাজ দেবে না- এগুলো একদম ভুয়া কথা! মাথা থেকে বের করে ফেলো! কারণ তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে দূরত্ব কিন্তু এখন কোনো বাধাই না!

তবে কাজ খোঁজার আগে নিজের ক্যারিয়ার গোল ঠিক করে নাও। কোন কোন বিষয়ে তোমার আগ্রহ আছে, সেটা নিজেই বের করো। কারণ, যেই বিষয়ে তোমার আগ্রহ নেই, সেই বিষয়ে ইন্টার্নশিপ করাটা হবে সময়ের অপচয়। আজকাল আমরা সবাই ফেসবুক ও লিংকড ইন ব্যবহার করে থাকি। এই দুইটি সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন পেশার মানুষজনের সাথে আমাদের পরিচয় ঘটে। তাদের মাধ্যমেও আমরা ইন্টার্নশিপের খবর পেতে পারি।

ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সিভি তৈরি। আমরা অনেকেই সিভি নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাই না। কিন্তু চাকরির আবেদনের সময়, ফর্মের সাথে তুমি যাবে না, যাবে তোমার সিভি। তাই সবচেয়ে ভাল হয় কলেজ জীবনেই তুমি তোমার সিভি নিয়ে কাজ শুরু করে দাও৷ শিক্ষাজীবনের নানারকম অর্জন তোমার সিভিতে যোগ করো, যা তোমাকে অন্যদের তুলনায় অনেক এগিয়ে থাকতে সাহায্য করবে। তবে সিভিতে মিথ্যা কিংবা অতিরঞ্জিত তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। সিভি তৈরির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপের সিভি লিখার ফরম্যাটটা ফলো করতে পারো। সবচেয়ে ভালো হয় সিভি তৈরি করার পর তা কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে দিয়ে চেক করিয়ে নাও।

আর কভার লেটার লেখার সময় তুমি কেন সেখানে কাজ করতে চাও, কী জন্য নিজেকে ওই পদের যোগ্য মনে করো- এই কথাগুলোও লিখে দেবে। তাই তুমি যেই প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করার জন্য আবেদন করছো, সেই প্রতিষ্ঠানটির খুঁটিনাটি বিষয় জেনে নাও।

ইন্টার্নশিপ বাছাই করার ক্ষেত্রে কী কী বিষয় খেয়াল রাখবো?

ইন্টার্নশিপ কেনো করা উচিৎ বা ইন্টার্নশিপ এর প্রয়োজনীয়তা কী কী সেই ব্যাপারে তো জানা গেলো। এবার আসা যাক ইন্টার্নশিপ বাছাই করার ক্ষেত্রে কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিৎ তা নিয়ে। শুরুতেই বলেছি যে, ইন্টার্নশিপের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। তবে ক্ষেত্র বিশেষে যদি কারো কাজ করার মতো সময় ও সুযোগ হয়, তাহলে এর আগেও সে করতে পারে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ইন্টার্নশিপ করাটা সবচেয়ে উপযুক্ত। এসময় বহিঃবিশ্বের সাথে মিলিত হবার এক বড় সুযোগ থাকে হাতের কাছে। সুযোগটি অবশ্যই একজন শিক্ষার্থীর কাজে লাগানো উচিৎ।

যে কারণে ইন্টার্নশিপ করা উচিৎ।
যে কারণে ইন্টার্নশিপ করা উচিৎ। (Image source: IVHQ)

যখন ইন্টার্নশিপ বাছাই করবে, তখন খেয়াল রাখা উচিৎ তুমি কোন দিকে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে চাও। তোমার ক্যারিয়ারে লক্ষ্য একটা। কিন্তু তুমি এমন এক ইন্টার্নশিপ বাঁছাই করলে যা তোমার ক্যারিয়ারের সাথে কোনো ভাবেই যায় না। ধরো তুমি চাচ্ছো বড় হয়ে একজন ব্যাংকার হবে। কিন্তু তুমি ইন্টার্নশিপ করলে হোটেল ম্যানেজমেন্টের উপর। অথবা ধরো তুমি চাচ্ছো লেখালেখিকে নিজের পেশা হিসেবে বেঁছে নিবে। কিন্তু তুমি ইন্টার্নশিপ করলে এমন কিছুর উপর যা তোমার লেখালেখির দক্ষতার সাথে যায় না। এরকম ভুল করা যাবে না। কোথায় কোন সময় কী রকম ইন্টার্নশিপের অফার করছে তা খোঁজ রাখা উচিৎ।

Re PJVr8XmVLpsbh6igbFuIUNBwlMiOY4AiD nsA2uI9m3FU5lP CHrxSUVrA44TMY45Uf5tTw IMJohAhRa10sPsAxV71 60kyNGjifQQbeoDVY57z3hEHUzpWE4kGNAL
ইন্টার্নশিপে যেনো টাকার চিন্তা না থাকে। (GIF source: Gfycat)

আর সর্বশেষ গুরত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, ইন্টার্নশিপ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কখনও অর্থলাভের কথা চিন্তা করা যাবে না। ইন্টার্নশিপ হলো এক প্রকার ট্রেনিং। এখানে কাজ করার বিনিময়ে তুমি তোমার ক্যারিয়ার গড়ার ব্যাপারে অভিজ্ঞতা লাভ করছো। যদি তুমি চিন্তা করো যে, “এখানে কাজ করে অনেক কষ্ট করবে, কিন্তু কোনো টাকা না পেলে লাভ কী!” তাহলে তুমি মস্ত বড় ভুল করছো। অর্থ উপার্জনের পথ সুগম করার জন্যই হলো ইন্টার্নশিপের সুবিধা। এখান থেকে যেই অভিজ্ঞতা লাভ করবে, তাই কাজে লাগিয়ে তুমি ভবিষ্যতে অর্থ উপার্জন করবে। তাই অর্থ উপার্জনের বিষয়টি যেন কখনও ইন্টার্নশিপ বাছাইয়ের অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়।

ইন্টার্ন হয়ে যাওয়ার পর 

ইন্টার্নশিপ কনফর্ম হয়ে যাওয়া মানেই কাজ শেষ হয়ে যাওয়া নয়, এর মানে হলো কাজ শুরু হয়ে যাওয়া, প্রতিদিনই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া। তাই প্রত্যেকটি বিষয়ই ইতিবাচকতার সাথে গ্রহণ করো। কারণ, তুমি এখানে শিখতেই এসেছো। 

ইতিবাচক মনোভাব:

শুরু শুরুতে তোমার মনে হতে পারে যে, তোমার মেন্টররা হয়তো তোমাকে খুব বেশি কাজ দেয়, অনেক চাপে রাখে। কিন্তু এই কাজের মাধ্যমে তারা দেখেন তুমি চাপে পড়ে কোনো কাজ কীভাবে করতে পারো, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারো নাকি, তোমার কাজ কতটুকু ভালো হয়। তাই প্রত্যেকটি কাজ এমন নিখুঁত ভাবে করো যেন এটা তোমার জীবনের শেষ কাজ!

যোগাযোগ করার আদবকেতা:

এখন তো আর চিঠি লেখার যুগ নেই, তাই সহকর্মীদের যোগাযোগ করার জন্য ই-মেইলই আমাদের ভরসা। তাই বেশ ভালোভাবে ই-মেইল লিখার কায়দা-কানুনটা রপ্ত করতে হবে। এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে কথা বলার সময়েও কিন্তু বড়-ছোট’র বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। তুমি নিশ্চয়ই তোমার বন্ধুদের সাথে যেভাবে কথা বলো, সেভাবে তোমার সিনিয়র কিংবা মেন্টরদের সাথে কথা বলবে না?

নিজের সেরাটা দাও:

যতটা সম্ভব নিজের সেরাটা দাও। আর এরজন্য তোমাকে নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ডেডলাইনের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে তুমি কোন কারণে ডেডলাইন মিস করেছো এটা মেন্টরদের জানিয়ে দিতে হবে। সমস্যা সবার থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে আলসেমি করে কাজ ফেলে রাখা যাবে না। কেননা শেষ মূহুর্তের কাজ কখনোই ভাল হয় না। তাই সময়ের কাজটা সময়েই শেষ করতে হবে।

যতো পারো প্রশ্ন করো:

প্রশ্ন করতে কখনো দ্বিধাবোধ করবে না৷ তুমি কোনো প্রফেশনাল কর্মী না, তুমি এখানে শিখতেই এসেছো। তাই কোনোকিছু না বুঝলে অবশ্যই সিনিয়রদের প্রশ্ন করবে। তারা তোমার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্যই আছেন। তুমি যত বেশি প্রশ্ন করবে, তত বেশি বেশি শিখতে পারবে৷ আর প্রশ্ন করার মাধ্যমে তারাও বুঝতে পারবেন যে, তুমি তোমার কাজ নিয়ে কত বেশি সিরিয়াস৷ আর এটা কিন্তু তোমার জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট!

নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার এই তো সুযোগ:

তুমি যেই প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন হিসেবে আছো, সেখানকার সকল কর্মচারীর সাথে পরিচিত হও, কুশল বিনিময় করো। এতে করে তোমার নেটওয়ার্ক অনেক বড় হয়ে উঠবে। পরবর্তীতে ওই কোম্পানির কোনো কাজে কিন্তু সবার আগে তোমার নামটাই তাদের মাথায় আসবে। আর এটা কিন্তু চাকরি পার্মানেন্ট করার একটা বড় সুযোগ!

একটা বিষয়েই ফোকাস করো:

সব বিষয়ে পারদর্শী হওয়ার চেষ্টা করো না। যেই কাজটা তুমি সবচেয়ে ভাল পারো, সেটার দিকেই পূর্ণ মনোযোগ দাও৷ একসাথে অনেক কাজ করতে গেলে পরে সময় মেলাতে হিমশিম খাবে এবং পরে দেখা যাবে যে কোনোটাই শেষ করতে পারোনি।

নিজেকে স্পঞ্জের মতন ভাবতে শেখো:

তোমরা সবাই নিশ্চয়ই স্পঞ্জ দেখেছো। স্পঞ্জ কী করে? সব কিছু শুষে নেয়, তাই তো? তুমিও একটা স্পঞ্জের মতন হয়ে উঠো, যেই স্পঞ্জ সামনে যা যা শেখার পায়; তার সব শুষে নেয়। ইন্টার্নশিপের মূল উদ্দেশ্যই হলো শেখা। যে যত বেশি শিখতে পারবে, সে তত বেশি লাভবান হবে৷ খুঁটিনাটি যা যা বিষয় আছে সব শিখে ফেলো। এটাই কিন্তু তোমার করপোরেট গ্রুমিং। তাই বেশি বেশি শুনবে এবং সব জ্ঞান ও তথ্য নিজের মধ্যে ধারণ করে নেবে। এই জ্ঞানগুলোই কিন্তু পরবর্তীতে তোমার জীবনে খুব কাজে আসবে।

নিজেই নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানাও:

মাঝে মাঝে কাজের এতবেশি চাপ পড়ে যায়, যে মনে হয় সবকিছু বাদ দিয়ে দিই, হাল ছেড়ে দিই। কিন্তু তুমি হাল ছাড়বে না! কেননা তুমি চ্যালেঞ্জ নিতে পিছপা হও না। চ্যালেঞ্জ নেওয়াই তোমার নেশা। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ে যাও৷ নিজেকে সবসময় বোঝাতে থাকো যে এই কাঙ্ক্ষিত ইন্টার্নশিপটার জন্য তুমি অনেকদিন অপেক্ষায় ছিলে। তোমার যেন পরে মনে না হয়, সুযোগ তোমার হাতে ছিল, সময় তোমার পক্ষে ছিল, কিন্তু হাল ছেড়ে দেওয়ার ফলে সুযোগটাও তোমার হাত গলে বেরিয়ে যায়৷ তখন আফসোস করা ছাড়া আর কিচ্ছু করা যাবে না।

ইন্টার্নশিপের উপকারিতা ও অপকারিতা:

সত্যি বলতে, ইন্টার্নশিপের তেমন কোনো অপকারিতা নেই। কিন্তু এর অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে।

ইন্টার্নশিপ একজন ব্যক্তিকে চাকরিতে ঢোকার আগেই চাকরির অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সহায়তা করে। কোনো চাকরির ইন্টারভিউতে তোমাকে যদি সেই চাকরি সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন করে, তাহলে শুধু থিওরিটিক্যাল উত্তর পেয়ে নিয়োগকর্তা সন্তুষ্ট হবেন না। কিন্তু তুমি যদি সেই বিষয়ের উপর আগে থেকেই ইন্টার্নশিপ করে থাকো, তাহলে তুমি প্র‍্যাক্টিকালভাবেও উত্তর দিতে পারবে। কারণ, তোমার সেই কাজে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে।

ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে তোমার করপোরেট জগৎ সম্পর্কে একটা ধারণা হয়৷ কীভাবে একটা প্রতিষ্ঠান চালানো হয়, কী কী হয় সব সম্বন্ধেই মোটামুটি একটা ধারণা তুমি পেয়ে যাও। আনপেইড ইন্টার্নশিপগুলোতে তুমি হয়তো আয় উপার্জন করতে পারো না, কিন্তু যেই অভিজ্ঞতাটা অর্জন করো, তা কিন্তু অর্থের থেকে কম নয়! কেননা অভিজ্ঞতা পারিশ্রমিকের থেকেও মূল্যবান।

ইন্টার্নশিপের মাধ্যমেই তুমি জানতে পারো কোন কাজে তোমার ভাল দক্ষতা আছে এবং তোমার দোষ-ত্রুটি কোন জায়গায়৷ তাই পার্মানেন্ট চাকরিতে ঢোকার আগে নিজের দোষগুলো চিহ্নিত করে শুধরাতে কিন্তু ইন্টার্নশিপই তোমাকে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে কিন্তু তোমার টাইম ম্যানেজমেন্টটাও একটা শৃঙ্খলায় চলে আসে৷ সময়ের কাজ সময়ে করা, কোনো কাজ ফেলে না রাখা- এগুলো ইন্টার্নির মাধ্যমেই বোঝা সম্ভব।

শেষ কথা

সবশেষে বলবো, ছাত্রজীবনে একটি ইন্টার্নশিপই তোমার ক্যারিয়ারের ভিত গড়ে তুলবে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল নলেজ বাড়াবে, সেই সাথে তোমার সিভি ভারী করবে এবং অভিজ্ঞতার ভান্ডার পূর্ণ করবে। তাই কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই বিভিন্ন কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ শুরু করে দাও। কারণ, অভিজ্ঞতা অর্জনের এই তো সুযোগ!

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.