ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি: জেনে নিন বিস্তারিত!

 

ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি: জেনে নিন বিস্তারিত!

ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করার ইচ্ছে অনেকেরই থাকে। ভালো বেতন, সুযোগ-সুবিধা, সেবা করার সুযোগ- এই সব কিছু মিলিয়ে ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি বর্তমানে অনেক তরুণের আগ্রহের জায়গাটি দখল করে নিয়েছে। তবে অনেকের মনেই এ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন থাকে, যেমন ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরি কেমন, শিক্ষাগত যোগ্যতা কতদূর প্রয়োজন ইত্যাদি।

তাই এই ব্লগটিতে ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরি কেমন তা নিয়ে বিস্তারিত জানবো। আমরা আলোচনা করবো ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতে চাইলে কী কী যোগ্যতা প্রয়োজন, কোন কোন ঔষধ কোম্পানি বর্তমানে ওষুধ শিল্পকে আরো এগিয়ে নিচ্ছে। আর একদম শেষে আমরা জানবো একজন অভিজ্ঞ ফার্মাসিস্টের অভিজ্ঞতা, অর্থ্যাৎ ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরিতে সফল যারা কেমন তারা, যাতে আপনি বুঝতে পারেন ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করতে চাইলে কী কী বিষয়ে আপনাকে নজর দিতেই হবে। 


ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি
ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরি কেমন? (Image Source: Freepik)

ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরি কেমন? 

বর্তমানে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প একটি ক্রমবর্ধমান সেক্টর। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ২৫৮ টির মতো ওষুধ প্রস্তুত ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান সক্রিয় আছে। গত ২০১৬ সালে বাংলাদেশের স্থানীয় মার্কেটে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার ঔষধ বিক্রি হয়, যা ২০১৭ সালে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। জন্ম থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রতিটি মানুষকে বিভিন্ন ঔষধের উপর নির্ভরশীল হতে হয়। অন্যদিকে, ফসলে কীটনাশক ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের প্রয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বিভিন্ন দীর্ঘ মেয়াদী রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। ৫০ বছর আগে অতি সাধারণ রোগেই মানুষ মারা যেতো। কিন্তু এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের দ্রুত অগ্রগতির ফলে জীবননাশক ক্যান্সার রোগেরও চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশে বিশ্বমানের সেই Anti-Cancer ঔষধও উৎপাদন হচ্ছে। তাই বলা যায়, এটি বিপুল সম্ভাবনাময় একটি শিল্প।

ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি
ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি (Image Source: Unsplash)

বাংলাদেশের সেরা কয়েকটি ঔষধ কোম্পানি

কোম্পানি

প্রতিষ্ঠা সাল

বৈশিষ্ট্য

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস

১৯৫৮

  • প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরী
  • বর্তমানে ৪২টি দেশে ঔষধ রপ্তানি করছে

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস

১৯৭০

  • প্রতিষ্ঠাতা এ এস এফ রহমান ও সালমান এফ রহমান
  • নিজ দেশের ঔষধের চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে প্রায় ১০৩ টি দেশে তৈরি পণ্য রপ্তানি করছে

ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস

১৯৯৯

  • এটি হিউম্যান ভ্যাকসিন তৈরির প্রযুক্তি অর্জনকারী প্রথম বাংলাদেশী কোম্পানি।

এ সি আই লিমিটেড

১৯২৫

  • কেবল ঔষধ নয়, কৃষি শিল্প সহ বেশ কিছু প্রকারের পণ্য এরা উৎপাদন করে

পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড

২০০২

  • ISO 9001:2015 সার্টিফাইড
  • ঔষধ উৎপাদনের পাশাপাশি প্রায় ৪২৭ ধরনের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করছে

ঔষধ রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ফার্মা মার্কেটের সম্ভাবনা কেমন?

বাংলাদেশে অনেকগুলো ভালো ওষুধ কোম্পানি আছে যারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত ‘গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস’ অনুসরণ করে উন্নত কারখানায় আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ তৈরি করছে। দারুণ ব্যপার এই যে তারা দেশের অভ্যন্তরীণ ওষুধের বাজারকে প্রায় স্বনির্ভর করতে পেরেছে এবং যুক্তরাজ্যের এমএইচআরএ (MHRA), ইউরোপের ইইউ (EEU), উপসাগরীয় দেশগুলোর জিসিসি (GCC), অস্ট্রেলিয়ার টিজিএ (TGA), ব্রাজিলের আনভিসা (ANVISA) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ (FDA) সনদসহ অনেকগুলো সনদ পেয়েছে। EPB, Bangladesh -এর সূত্রানুযায়ী বাংলাদেশ বর্তমানে পৃথিবীর ১০৬ টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে এবং প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। সেই সাথে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের ওষুধ অনেক প্রশংসিত হয়েছে।


ফার্মাসিউটিকাল সেক্টর অন্যান্য সেক্টর থেকে কি আলাদা?

ফার্মাসিউটিকাল সেক্টর অন্যান্য সেক্টর থেকে সম্পূর্ণই আলাদা। কারণ এই সেক্টরের প্রথম কাস্টমার হিসেবে ডাক্তাররা এবং পরবর্তীতে চূড়ান্ত কাস্টমার হিসেবে রোগীরা ভূমিকা পালন করে। ডাক্তাররা আমাদের সমাজের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক; পেশায় বা শিক্ষায় যেভাবেই বলিনা কেন। অন্যান্য কনজুমার সেক্টরের কাস্টমাররা এরকম না। এই সেক্টরে যেহেতু জীবন রক্ষাকারী ঔষধ নিয়ে কাজ করতে হয় তাই প্রতিটি তথ্য Scientifically Proved হতে হয়। চিকিৎসা ও ঔষধ বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে, অ্যাডভান্সড হচ্ছে। তাই এই সেক্টরে দ্রুত রিটার্ন আসেনা। তাই ফার্মাসিউটিকাল ব্যবসার উদ্যোক্তাদের অনেক দূরদর্শী হতে হয়। তেমনি ফার্মাসিউটিকাল সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে তরুণদেরও অনেক দূরদর্শী হতে হয়; সুদূর-প্রসারী মনোভাব ও চিন্তা ছাড়া এই সেক্টরে ভালো করা যায় না।

ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরি কেমন
ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি (Image Source: Pexels)

ফার্মাসিস্ট হিসেবে ফার্মা সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ কেমন?

বাংলাদেশের ফার্মা সেক্টরে ফার্মাসিস্টরা দু’টি দিকে কাজ করে:

১) কর্পোরেট সাইডে

২) প্ল্যান্ট বা ফ্যাক্টরিতে।

ফার্মেসি এমন এক ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে একজন ফার্মাসিস্টের জ্ঞানের পরিধি থাকে অনেক বিস্তৃত তথা মেডিকেল, মার্কেটিং, কম্পিউটার সহ আধুনিক বৈশ্বিক যুগে যা কিছু প্রয়োজন তা সবই। যেকোনো ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি পরিচালনা থেকে শুরু করে কাজ বাস্তবায়নের দিক থেকে ফার্মাসিস্ট অদ্বিতীয় ও অনন্য। ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোতে ফার্মাসিস্টরা প্রডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট, ট্রেনিং ডিপার্টমেন্ট, কমার্শিয়াল ডিপার্টমেন্ট / সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, প্রডাক্ট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, প্রডাকশন ডিপার্টমেন্ট, কোয়ালিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্ট, কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স ডিপার্টমেন্ট, টেকনিক্যাল সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট, প্ল্যানিং ডিপার্টমেন্ট, সেলস্ সাপোর্ট ডিপার্টমেন্ট, রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সসহ অন্যান্য ডিপার্টমেন্টে কাজ করছে।

ফার্মাসিস্টের কাজ

একজন ফার্মাসিস্টের কাজগুলো হলো,

  •       ঔষধ সম্পর্কিত গবেষণা
  •       ঔষধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কী কী প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হবে তার পরিকল্পনা তৈরি করা
  •       উৎপাদিত ঔষধের মান পরীক্ষা করা
  •       উৎপাদনের ক্ষেত্রে আইনের কোন লঙ্ঘন হচ্ছে কি না তার দিকে নজর রাখা
  •       ঔষধের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা

এছাড়া রিটেইল ফার্মাসিস্টরা সার্জিক্যাল সাপ্লাই, ওষুধের হিসাব রাখা, ট্রেনিং স্টাফ তৈরির কাজ করেন। হসপিটাল ফার্মাসিস্টরা যুক্ত থাকেন হাসপাতাল কিংবা নার্সিং হোমের সাথে। ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ফার্মাসিস্টরা সরাসরি ওষুধ উৎপাদনের সাথে এবং রিসার্চ ফার্মাসিস্টরা ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সের সাথে যুক্ত থাকেন। 

ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি 1
ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি (Image Source: Pixabay.com)

ফার্মাসিস্টের শিক্ষাগত যোগ্যতা

ফার্মাসিস্ট হতে চাইলে দুইভাবে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করা যায়। প্রথমত, মাধ্যমিক পরীক্ষারপর ফার্মাসির ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে হবে। এটি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এই কোর্স কোথাও ৩ এবং কোথাও ৪ বছরের হয়। দ্বিতীয়ত, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে ৪ বছরের ব্যাচেলর অফ ফার্মাসি ডিগ্রির সুযোগ রয়েছে। এছাড়া কোথাও কোথাও ৫ বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অফ ফার্মাসি প্রফেশনাল ডিগ্রি অর্জন করা যায়। ব্যাচেলর অফ ফার্মাসির পর ১-২ বছরের মাস্টার্স অফ ফার্মাসি ডিগ্রি নিতে হয়। তবে মাস্টার্স না করেও কেবল অনার্সের পর চাকরিতে ঢোকা সম্ভব। 

নন-ফার্মাসিস্ট হিসেবে ফার্মা সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ

নন ফার্মাসিস্ট হিসেবে ফার্মা সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। কর্পোরেট সাইডের বিশাল বড় একটা অংশে কাজ করে ফার্মাসিউটিক্যাল সেলস টিম। এখন বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ তরুণ প্রত্যক্ষভাবে ফার্মাসিউটিক্যাল সেলস পেশায় নিয়োজিত। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানী ন্যূনতম গ্রাজুয়েশান করা এবং অন্ততঃপক্ষে এইচ.এস.সি. পর্যন্ত বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে অধ্যয়ন করেছেন এমন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে প্রার্থীকে অবশ্যই অধিক পরিশ্রমী হতে হবে, Career Oriented হতে হবে, হতে হবে উদ্যমী ও সৃজনশীল। এছাড়া যোগ্যতা হিসেবে তাকে মেডিকেল শব্দাবলী সহ ইংরেজী লিখতে, পড়তে ও বলতে পারতে হয়যোগাযোগ দক্ষতা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হয়, হতে হয় কাজের প্রতি আন্তরিক, সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ হতে হয়। 

 

ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিনিধিদের কাজ

ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিনিধি হিসেবে যোগদানের পর প্রথমেই দুই-তিন মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিতে হয়। এখানে কোম্পানির প্রোডাক্ট সম্পর্কে ধারণা নেয়ার পরই কাজে নামতে হয়। তাদের জন্য এলাকা নির্ধারিত থাকে, সেই এলাকার ডাক্তারদের সাথে সাক্ষাৎ করা, তাদের চেম্বারে উপস্থিত হয়ে ওষুধের গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো তাদের কাজ। সারাদিনের কাজ পরের দিন সকালে অফিসের সংশ্লিষ্ট বিভাগে ঊর্ধ্বতন কর্মাকর্তাকে বুঝিয়ে দিয়ে হয়। 

ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি 1
ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি (Image Source: Freepik)

ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি: সফল যারা কেমন তারা

মোঃ আল-আমিন; এম. ফার্ম, এম.বি.এ; সি.ই.ও ,দি ফার্মা ৩৬০

E-mail: thepharma360@gmail.com

মো: আল-আমিন ২০০৮ সালে বি.ফার্ম. ও ২০০৯ সালে এম. ফার্ম. ডিগ্রী অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.বি.এ. করেন। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত দুটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানী-পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লি. এবং ওরিয়ন ফার্মা. লি.- এর প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টে ছয় বছরের অধিক সময় ধরে কর্মরত ছিলেন।

২০১৩ সালে তিনি ফার্মাসিস্ট ও ফার্মাসিউটিক্যাল সেল্স ফোর্সদের জন্য বাংলাদেশে প্রথম ‘Al-Amin Pharmacy Professional Program (APPP)’ নামে একটি ট্রেনিং একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। যা পরবর্তীকালে বড় পরিসরে ‘The Pharma 360’ নামে উন্মোচিত হয়। ২০০৯ সালে ফার্মাসিস্টদের জন্য AIM নামে তাঁর প্রথম বইয়ের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১১ টি। 

  • আপনার বাল্যকাল সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?

ছোটবেলায় যখন বন্ধুদের সাথে খেলা করতাম তখন সবকিছু বিষয়ে আমি-ই সিদ্ধান্ত নিতাম। অর্থাৎ নেতৃত্ব দিতাম। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গুলো আমি-ই নিতাম। তখন থেকেই আমার নিজের ভেতর একটা বিষয় কাজ করতো যে, আমার চারপাশে যারা থাকবে তাঁদের মধ্যে আমি প্রধান হিসেবে কাজ করবো। এটা আমার প্রাইমারী লেভেলের কথা। এরপর হাইস্কুল ও কলেজের মাঝখানের কথা। তখনকার স্বপ্ন ছিল যে, আমি যে অফিসে চাকরি করবো সেই অফিসে আমি-ই থাকবো ঊর্ধ্বতন পজিশনে। সেই স্বপ্নই আমাকে আজ হয়তো সি.ই.ও পদে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যেহেতু আমি ফার্মাসিউটিক্যাল সাইন্সে (ফার্মেসি) পড়াশুনা করি, শুরুতে বছর ছ’য়েক বাংলাদেশের নামকরা দুটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে প্রডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট-এ কাজ করি।

  • আপনার বাল্যকালের স্বপ্ন আর আজকের আপনি এই দুইয়ের মাঝে কি মিল খুঁজে পান ?

আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি মানুষকেই তার নিজস্ব ভালো লাগার উপরে কাজ করে যেতে হয়। আমার ক্ষেত্রে সত্যিই তাই-ই হয়েছে। আমার ছোটবেলার সেই স্বপ্ন আমাকে আবার তাড়া করতে থাকে। অন্যদিকে দেখছিলাম অনেক ক্রিয়েটিভ আইডিয়া বাস্তবে রূপ দেওয়া যাচ্ছেনা কোম্পানির পলিসিজনিত কারণে। অথচ আমার কাছে পরিষ্কার যে, উক্ত আইডিয়াগুলোর বাস্তব রুপের ফল কেমন হবে। চাকরি ছেড়ে দিলাম এবং নিজের প্রতিষ্ঠানে আত্মনিয়োগ করলাম। ঠিক তখনি আমি আমার মনের গহীনের স্বপ্নকে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে পুরো ফার্মা মার্কেটের উপর ছড়িয়ে দিলাম। ফলশ্রুতিতে একটা রূপরেখা দাঁড় করলাম। অর্থাৎ আমাকে আমার স্বপ্ন পূরণ তথা সি.ই.ও হতে হবে এবং ফার্মা মার্কেটের Areas of Improvement-এ কাজ করতে হবে। শুরু হলো স্বপ্ন আর ক্রিয়েটিভ আইডিয়া নিয়ে কাজ করা।

ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরি কেমন 1
ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরি কেমন? (Image Source: Pexels)
  • বাংলাদেশের ফার্মা সেক্টরে আপনি ক্যারিয়ার গড়ে নিজেকে সার্থক মনে করেন?

মানব সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে চেয়েছিলাম ছোটবেলা থেকেই। ‘স্রষ্টার ইবাদত আর সৃষ্টির সেবা’ এই ব্রত নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। ফার্মা মার্কেটের একজন Entrepreneur এই সেবা দিতে পারেন সমাজকে তথা সাধারণ মানুষের কাছে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ প্রদানের মাধ্যমে। আলহামদুল্লিাহ্‌ আমি ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে অনেক সার্থক মনে করি এবং আত্মতৃপ্তি বোধ করি এই ভেবে যে আমার ক্যারিয়ারটা সরাসরি মানুষের সেই জীবন রক্ষাকারী ঔষধ প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠানের সাথেই।

  • ফার্মা সেক্টরকে আরও যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কি?

এক্ষেত্রে আমি বলবো, Ensuring the Quality of 5M is the key secret of the Pharmaceutical business.

  • Man
  • Machine
  • Materials (Active Pharmaceutical Ingredients & Excipients)
  • Method
  • Management

এই পাঁচটি বিষয়কে আমরা যদি পুংখানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করি তবে এই সেক্টরকে আরও যুগোপযোগী করে আরও সামনে নিয়ে যেতে পারবো ইনশাআল্লাহ্‌।


শেষ কথা

আমাদের এই আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিলো ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি সম্পর্কে ধারণা দেয়া। সেই লক্ষ্য সাধণে আমরা শুরুতে আলোচনা করেছি ফার্মাসিউটিক্যালস চাকরি কেমন, শিক্ষাগত যোগ্যতা কী কী প্রয়োজন এসব নিয়ে। আমরা দেখেছি নন ফার্মাসিস্ট হয়েও ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি পাওয়া এবং সফল হওয়া সম্ভব। পাশাপাশি মোঃ  আল-আমিনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানতে পারলাম কি করে তিনি ছোটবেলায় দেখা স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন, হয়েছেন একজন সফল ফার্মাসিস্ট। 

এই ব্লগটি ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে যদি আপনার জানার আগ্রহকে আরো বাড়িয়ে তোলে, তাই আমাদের সার্থকতা। 


তথ্যাসূত্র: 

  1. Technical Care BD 
  2. Career কী?

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.