ব্রেকিং নিউজ

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সংশোধন: অনলাইনে আবেদনের সম্পূর্ণ নির্দেশিকা

 


জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সংশোধন: অনলাইনে আবেদনের সম্পূর্ণ নির্দেশিকা

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে কোনো ভুল থাকলে তা সংশোধনের জন্য এখন আর ভোগান্তি পোহাতে হয় না। ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে সহজেই আপনি আপনার এনআইডি কার্ডের ভুল সংশোধন করতে পারবেন। সাধারণত নতুন ভোটার হওয়ার সময় বা তথ্য লিপিবদ্ধ করার সময় ভুল হয়ে থাকে। এই প্রবন্ধে আমরা ধাপে ধাপে এনআইডি কার্ড সংশোধনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচ এবং সময়সীমা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।


এনআইডি কার্ড সংশোধনের নিয়মাবলী

এনআইডি কার্ড সংশোধনের পুরো প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপে বিভক্ত:

ধাপ ১: অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন

  • প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে যান।

  • আপনার এনআইডি নম্বর, জন্ম তারিখ, ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। এনআইডি নম্বর জানা না থাকলে ভোটার স্লিপের ফরম নম্বর ব্যবহার করা যাবে।

  • এরপর NID Wallet App ব্যবহার করে ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন। এটি আপনার পরিচয় নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

  • ফেস ভেরিফিকেশন শেষে একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন। এটি পরবর্তীতে সরাসরি লগইন করার জন্য কাজে লাগবে।

ধাপ ২: ভোটার আইডি তথ্য সংশোধন

  • অ্যাকাউন্টে লগইন করার পর ‘প্রোফাইল’ ট্যাবে ক্লিক করুন।

  • এখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্য দেখতে পাবেন।

  • যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান, তার বাম পাশের টিক অপশনে ক্লিক করে ‘এডিট’ বাটনে চাপুন।

  • এরপর আপনার ভুল তথ্যগুলো প্রমাণপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে সঠিকভাবে টাইপ করুন এবং ‘পরবর্তী’ বাটনে ক্লিক করুন।

  • এই ধাপে আপনার সংশোধিত তথ্যের একটি সারাংশ দেখতে পাবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে পুনরায় ‘পরবর্তী’ বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৩: ফি প্রদান

  • সংশোধনের ধরনের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দিতে হয়।

  • বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ও নগদ ব্যবহার করে ফি পরিশোধ করা যায়।

  • সংশোধন ফি এর তালিকা:

    • ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন: ২৩০ টাকা

    • অন্যান্য তথ্য সংশোধন: ১১৫ টাকা

    • উভয় তথ্য সংশোধন: ৩৭৫ টাকা

    • আইডি কার্ড রি-ইস্যু (জরুরি): ২৩ টাকা

    • আইডি কার্ড রি-ইস্যু (নিয়মিত): ২৩০ টাকা

ধাপ ৪: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড

  • আপনার সংশোধনের আবেদন প্রমাণ করার জন্য কিছু কাগজপত্র আপলোড করতে হবে।

  • নাম বা জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য: শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ (JSC, SSC, HSC), অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা ই-পাসপোর্ট কার্যকর প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয়।

  • পিতা-মাতার নাম সংশোধনের জন্য: তাদের এনআইডি কার্ডের স্ক্যান কপি এবং আপনার ভাই-বোনদের আইডি কার্ডের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে।

  • ঠিকানা সংশোধনের জন্য: বিদ্যুৎ বিলের কাগজ বা অন্য কোনো ইউটিলিটি বিলের কপি জমা দিতে হবে।

  • রক্তের গ্রুপ যুক্ত/পরিবর্তন করতে: স্বাস্থ্য ক্লিনিক থেকে পাওয়া রক্তের গ্রুপ টেস্ট রিপোর্ট আপলোড করতে হবে।

  • স্বামী বা স্ত্রীর নাম সংশোধনের জন্য: কাবিননামার কপি প্রয়োজন হবে।

ধাপ ৫: সংশোধিত আইডি কার্ড ডাউনলোড

  • আবেদন জমা দেওয়ার পর এবং যথাযথ ডকুমেন্ট আপলোড করার পর সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যেও এটি সম্পন্ন হতে পারে।

  • আবেদন অনুমোদিত হলে আপনার ফোনে একটি মেসেজ পাঠানো হবে।

  • এরপর আপনি এনআইডি ওয়েবসাইট থেকে আপনার সংশোধিত আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। প্রয়োজনে এটি স্থানীয় নির্বাচন অফিস থেকেও সংগ্রহ করা যায়।


কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • ঠিকানা পরিবর্তন: বর্তমানে অনলাইনে ঠিকানা পরিবর্তনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এর জন্য ফরম নং ১৩ (ভোটার এলাকা স্থানান্তর ফরম) পূরণ করে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হয়।

  • কতবার সংশোধন করা যায়? এনআইডি সংশোধনের কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। তবে একবার সংশোধিত তথ্য পুনরায় পরিবর্তনের জন্য আলাদা ফি দিতে হয়।

  • আবেদন অনুমোদন হতে কত দিন লাগে? আবেদনের ক্যাটাগরি ও জটিলতার উপর নির্ভর করে অনুমোদন পেতে সময় ভিন্ন হয়। তবে সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যেই এটি সম্পন্ন হয়।

এনআইডি সংশোধন একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তাই আবেদন করার আগে সকল তথ্য এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে মিলিয়ে নেওয়া জরুরি।

Post a Comment

0 Comments